এক অসম্পূর্ণ প্রেম কাহিনী ll Bengali Love story ll Part-2

রবিন কথা বলছে না। ডাক্টার বাবুরা লাইফ সাপোর্ট সিষ্টেম অবজারভেশন এ রেখেছেন। মাথায় সাত টা স্টিচ। এতকিছুর মধ্যে ভালো খবর এটাই যে অপারেশন successful হয়েছে, জ্ঞান ফিরতে সময় লাগবে।  হারামজাদা টাকে এই অবস্থায় দেখবো স্বপ্নেও ভাবিনি। লোকাল থানার একজন পরিচিত সিভিক ভাইয়ের কাছে জানতে পারলাম রঘুনাথপুর থেকে আদ্রা যাওয়ার রাস্তায় দামোদর মাহাতোর হোটেল পেরিয়ে বাম দিকের টার্নিং এর পাশের রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা একটি বিদ্যুৎ খুঁটি তে অতি বেগে আঘাত করেছে। মাদক নেশা করে গাড়ি চালানোর সম্ভাবনা তারা উড়িয়ে দিচ্ছে না। 

রবিন কে আমি চিনি ছোট বেলা থেকে মাদক সেবন দূরের কথা কোনো দিন বিড়ি সিগারেট পর্যন্ত খেতে দেখিনি তাকে। এটা অসম্ভব।
সঙ্গীতার বিয়ে তে যাচ্ছিলো রবিন। বিয়ের নেমন্তন্ন করলো যেদিন সঙ্গীতা আমিও ছিলাম সেদিন। রবিনের মুখ চেয়ে কিছু বলিনি সেদিন। শুধু বললাম congratulations।  বুঝতে পারছিলাম বুকের ভেতর টা ফেটে যাচ্ছিল রবিনের কিন্তু এমন ভাব দেখালো যেন সে বিশাল খুশি বাকিদের মত। ওদের সম্পর্ক টা অনেক দিনের। অনেক চেষ্টা করেও সঙ্গীতার বাড়ির লোকজন তাদের সম্পর্ক টা মেনে নেয়নি। বাড়ির অমতে বাড়ির লোক দের মনে কষ্ট দিয়ে বিয়ে করার মেয়ে সঙ্গীতা নয়।

কাল যার সাথে বিয়ে হলো সঙ্গীতার সেই ছেলে নাকি তার বাবার পছন্দের। 
সব দিক দিয়ে বিবেচনা করলে একটা ভালো মেয়ে পেয়েছিল রবিন। কিন্তু বলে না জন্ম মৃত্যু বিয়ে তিন বিধাতা নিয়ে।  তাদের প্রেম টা প্রচন্ড গভীর হয় ভাগ্য যাদের এক হওয়া লেখে না।  কিছু বছর আগেরই কথা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে যাওয়ার আগে যেদিন সঙ্গীতা কে প্রপোজ করেছিল রবিন। টাক্সি স্ট্যান্ডের চার মাথা মোড়ের মাঝের বড় হাই মাস্ট লাইট এর গোল চাতালের ওপর চেপে সঙ্গীতার নাম ধরে চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে বলেছিল তার মনের কথা।  ডিউটি রত ট্রাফিক গার্ড লাঠি নিয়ে দৌরেছিল আমাদের পেছনে সেটা পরের কথা কিন্তু ও যে এরকম কিছু করবে আগে বুঝতে পারলে ওখানেই বন্ধুত্ব শেষ করে দিতাম। সঙ্গীতা তাকে বুকে আগলে নিতে এক মুহূর্ত দেরি করেনি সেদিন। ওদের দেখে খুব আনন্দ হয়েছিল সেদিন। 

সেদিনের পাগল টা আজ ICU তে। (msTBI) moderate to severe Traumatic Brain Injury syndrome দেখা গেছে। এই ভাবে দেখতে পারছি না। একটা miracle হোক আর হারামজাদা টা উঠে বলুক ভাই আমাদের লাদাখ ট্রিপ is on. 

সঙ্গীতার প্রতিটা মিথ্যে রবিন প্রথম থেকেই জানত। বাবার পছন্দ করা ছেলেটা আসলে যে সঙ্গীতার নিজের পছন্দ। অফিস ট্যুরের নাম করে যেদিন প্রথম দীঘা গেছিলো রবিন পুরোটাই জানত।  মানুষ ধোকা দেয়না । তারা অন্য কাউকে ভালোবেসে ফেলে এবং আপনাকে বলতে ভুলে যায়।

*সব চরিত্র কাল্পনিক*
গল্পটা কেমন লাগলো কমেন্ট বক্সে জানাবেন।

লেখা - Joydeep Mukherjee
ছবি - সংগৃহীত।
 

Post a Comment

Please do not enter any spam link in the comment box.

নবীনতর পূর্বতন